শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষকদের বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষে হয়েছে। পৃথক বেতন কাঠামো ও অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে গ্রেড সমস্যা নিরসন নিয়ে মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বেলা সাড়ে তিনটা থেকে দেড় ঘণ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষা পরিবারের সদস্য হিসেবে তিনি শিক্ষকদের দাবির বিষয়গুলো শুনেছেন। এখন তিনি এগুলো বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে উপস্থাপন করবেন। মন্ত্রী আরো বলেছেন, শিক্ষকদের মান মর্যাদা যাতে অক্ষুণ্ন থাকে তা তিনি চেষ্টা করবেন। তার কাছে শিক্ষকদের মান অনেক ওপরে। কারণ শিক্ষাটা নির্ভর করে শিক্ষকদের মান মর্যাদার ওপর। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এই মাসের মধ্যে তারা কোনো কর্মসূচি দেননি। ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু এ মাসের মধ্যে দৃশ্যমান কিছু না হলে তাদের ওপর ১ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মসূচির চাপ আছে। তবে তিনি আশা করেন তা করতে হবে না।
আর ফেডারেশনের মহাসচিব এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, ৩০ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মানা না হলে ১ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছে ফেডারেশনের সভায়। আন্দোলনরত শিক্ষকদের ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এতে যোগ দেন। বৈঠকের শুরুতেই শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষকদের দাবি সরকার ‘আমলে’ নিয়েছে। এ জন্য বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই এ কমিটির সভা হবে। সেখানে শিক্ষকদের এ দাবির বিষয়টি যাতে কার্যকরভাবে উপস্থাপন করা যায়, সে জন্যই আজকের আলোচনা হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যেহেতু সরকার শিক্ষকদের এই দাবি আমলে নিয়ে কমিটি করেছে, সে জন্য তাদের প্রতি আহ্বান, তারা যেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের কোনো ক্ষতি না করেন। এ সময় শিক্ষকেরা মন্ত্রীর কাছে একটি লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। এতে তারা শিক্ষকদের জন্য অবিলম্বে একটি আলাদা বেতন কমিশন গঠনের দাবি জানান। এ দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অষ্টম বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণ করে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের বেতন-ভাতা গ্রেড-১, অধ্যাপকদের গ্রেড-২, সহযোগী অধ্যাপকদের গ্রেড-৩, , সহকারী অধ্যাপকদের গ্রেড-৫ এবং প্রভাষকদের গ্রেড-৭ নির্ধারণের দাবি জানান তারা।
পৃথক বেতন কাঠামো ও গ্রেড সমস্যা নিরসনের দাবিতে প্রায় চার মাস ধরে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এর মধ্যে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। এরপর শিক্ষামন্ত্রী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে পরে দুঃখপ্রকাশ করেন। তা সত্ত্বেও এরপর শিক্ষকদের আন্দোলন আরো জোরদার হয়। এরই মধ্যে গত রবিবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।